Monday, March 12, 2018

বিমান বিধ্বস্ত হবার নেপথ্যে ‘ভুল বার্তা’ দায়ী! দাবী ইউএস বাংলা কতৃপক্ষের



নেপালের কাঠমুন্ডুতে বিধ্বস্ত বিমানটি ভুল বার্তার কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে বলে দাবি করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের কর্তৃপক্ষ।

ইউএস-বাংলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ জানান, নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে দেয়া ভুল বার্তার কারণে সোমবার বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকাস্থ ইউএস বাংলার কার্যালয়ের সামনে সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ তথ্য জানান।

ইমরান আসিফ বলেন, বিমানের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে ভুল বার্তা দেয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে এর অডিও বার্তা ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে বিমান দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫০ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স। ৬৭ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু সহ মোট ৭১ জন মানুষ ছিলেন।

তবে ইউএস বাংলার দাবির প্রেক্ষিতে নেপাল কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। বিমানবন্দরে কোনো ত্রুটি আছে বলেও এখনো স্বীকার করেনি তারা।

এদিকে বিমানে যান্ত্রিক কোনো ত্রুটি ছিল না বলে জানিয়েছে ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষ। বিমান উড্ডয়নের আগে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তখন কোনো ধরনের ত্রুটি পাওয়া যায়নি।

বাড়ি ফেরা হল না সিলেটের ১৩ মেডিকেল শিক্ষার্থীর!

নেপালে বিধ্বস্ত বিমানটিতে ছিল ১৩ জন মেডিকেল শিক্ষার্থী। যার মধ্যে ১১ জন মেয়ে ও ২ জন ছেলে। তারা নেপালের নাগরিক ছিলেন। বাংলাদেশের সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

পরীক্ষা শেষে নিজ দেশ নেপালে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। কিন্তু তার আগেই নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুতে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে।

জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল আবেদ হোসেন জানান, ওই বিধ্বস্ত বিমানে তাদের ১৩ শিক্ষার্থী ছিলেন। এদের সবারই মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পেয়েছেন তিনি। এদের মধ্যে ১১ জন মেয়ে শিক্ষার্থী ও ২ জন ছেলে শিক্ষার্থী।

আবেদ হোসেন জানান, নিহতরা সবাই ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা শেষ করে নিজেদের দেশ নেপালে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। নেপাল পৌঁছার পরই এ দুর্ঘটনার স্বীকার হন তারা।

এদিকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের উপ-পরিচালক ডা. আরমান আহমদ শিপলু।

উল্লেখ্য, ইউএস বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। ইউএস বাংলার ওই বিমানে ৬৭ জন যাত্রী এবং ৪জন ক্রু ছিলেন।

পাইলট আবিদকে আহত অবস্থায় উদ্ধার, সহকারী পাইলট প্রিথিলা নিহত

নেপালে দুর্ঘটনার শিকার ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সহকারী পাইলট প্রিথিলা রশিদ নিহত হয়েছেন।
রাজধানীর বারিধারায় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রধান কার্যালয় থেকে জানানো হয়, নেপালের কাঠমুন্ডু এয়ারপোর্টের কাছাকাছি বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটির ফ্লাইট নম্বর ছিল BS-211।

বেলা ১২টা ৫১মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৬৭জন যাত্রী নিয়ে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিমানটি দুপুর ২টা ২০মিনিটে বিধ্বস্ত হয়।

ইতোমধ্যে নেপালের ত্রিভুবন এয়ারপোর্টের কাছে দুর্ঘটনার শিকার ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের মৃতদেহের ছবি প্রকাশ করতে শুরু করেছে নেপালি গণমাধ্যম।


সম্পর্কিত সংবাদ

বিধ্বস্ত হবার মুহুর্তে বিমানের জানালা ভেঙ্গে লাফিয়ে প্রাণ বাঁচানো এক ‘ভাগ্যবান’ যাত্রী!

বিধ্বস্ত বিমানে থাকা সব যাত্রীদের তালিকাসহ সর্বশেষ আপডেট 

কেন এ দুর্ঘটনা, খুঁজে বের করার আহ্বান ত্রাণমন্ত্রীর

নেপালের কাঠমুন্ডুতে বিধ্বস্ত বিমানটির যাত্রীদের শতভাগ ইন্স্যুরেন্স করা আছে জানিয়ে দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এ সময় তিনি বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ারের ভুল, নাকি বাংলাদেশের কোনো ভুলে এ দুর্ঘটনা, তা খুঁজে বের করতে বিমানমন্ত্রীর (এ কে এম শাহজাহান কামাল) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারায় ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাতের পর মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, যাত্রীদের শতভাগ ইন্স্যুরেন্স করা আছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার মন্ত্রণালয়ের কাছে যদি ক্ষতিগ্রস্ত বা তার পরিবারের কেউ সহায়তা চান সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
Previous Post
Next Post
Related Posts

0 comments: